ইচ্ছে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স শেষ করে ১ দিন ও বসে না থেকে জবে ঢুকে যাওয়ার। যেহেতু আমার প্রায়োরিটি লিস্টে সরকারি চাকুরী বা ব্যাংকে জয়েন করা ছিলনা, তাই সিদ্ধান্ত নেয়া খুব সহজ ছিল যে আসলে কোন দিকে যাবো। আর সে অনুযায়ী প্রস্তুতি ও নিয়েছিলাম অনার্সে পড়াশুনাকালীন। মাস্টার্সের পরীক্ষা দিতে দিতেই পছন্দের নন-প্রফিট সেক্টরে এপ্লাই করা শুরু করেছিলাম। পরীক্ষা শেষ করার পরপরই রিটেন পরীক্ষার জন্য ডাক পাই ২ টা অর্গানাইজেশনে। জব রিলেটেড পড়াশুনা করে গিয়ে প্রথমটায় পরীক্ষা দেই। প্রথম চাকুরীর পরীক্ষা আর কম্পিটিটররা বেশ সিনিয়র দেখে একটু ভড়কে যাই যে আমার আর কোত্থেকে হবে।
প্রথম অর্গানাইজেশনের লিখিত পরীক্ষায় পাশ করার ইমেইল পেয়ে বেশ ভালো লেগেছিল। ডাকলো ইন্টার্ভিউ দিতে। গিয়ে দেখি ভার্সিটির পরিচিত সিনিয়ররা ও ক্যান্ডিডেড। অপেক্ষার পরে সাহস করে ইন্টার্ভিউ দিতে ঢুকলাম। টুকটাক বিভিন্ন প্রশ্নের পর আসল কোথায় আসলো, ‘দেখো, এটা একটু সিনিয়র পজিশন, তুমি তো মাত্র মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়ে এসেছ আর রেজাল্ট ও হয়নি, এ পজিশনে আমরা একটু সিনিয়র কাওকে চাচ্ছিলাম, তবুও তোমাকে জানানো হবে’। বুঝে গেলাম যে, হবেনা একদম শিউর। ওনারা আসলে এক সিনিয়র ভাইকেই নিয়েছিলেন।
পরেরটায় ও রিটেনে ডাক পেয়ে ভাইভাতে আবারো মাত্র মাস্টার্স ক্যান্ডিডেড ও কোন প্রফেশনাল অভিজ্ঞতা না থাকার দোহায় দিয়ে হলোনা। বেশ জেদ চেপে গিয়েছিল যে জব গুলা কানের পাশ দিয়ে যাচ্ছে, আমি জয়েন করতে চাই কোথাও। এর মধ্যে ব্র্যাকের একটা প্রজেক্টে খন্ডকালীন কাজ করলেও মাস্টার্স শেষ করে ৩ মাসের মত এমন প্রসেস থেকে হতাশ লাগতো! তারপরে সিদ্ধান্ত নিলাম, যদি এর পরের কোন অর্গানাইজেশনে অভিজ্ঞতা নাই বলে, তাহলে কড়া জ্ববাব দিব।
এরপরের চাকুরীর লিখিত পরীক্ষা দিলাম ইউনূস সেন্টারে। তাও নিজের ভার্সিটির ৫/৬ ব্যাচ সিনিয়রদের দেখে পরীক্ষা শুরুর আগেই অজানা হতাশা কাজ করলো যে মনে হয় সিনিয়রই নিবে। যাই হউক, কনফিডেন্স নিয়ে পরীক্ষা দিলাম আর টিকলাম। যথাযথ ভাইবা তে এইচআর ম্যানেজার যখন সেইম কথা বললো আর বললো যে আরেকটা জুনিয়র পজিশন আছে, শেখানে কাজ করবো কিনা? সাহস করে বললাম “এ পজিশনেই আমি কাজ করতে পারবো, যদি না পারি,তাহলে ৩ মাসের প্রভিশন পিরিয়ড শেষ হলে যদি ইভ্যালুয়েশন ভালো না হয়, তাহলে আমি নিজেই রিজাইন দিয়ে চলে যাব।” কাজ হলো, কদিন পরেই জানালো অমুক তারিখে জয়েনিং!
নিজের এ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করার মূল কারণ হলো, সবার কমন কমপ্লেইন যে প্রাইভেট সেক্টরে অভিজ্ঞতা ছাড়া একদমই ঢুকা যায়না বা গেলেও নিজের পছন্দের কোম্পানি হয়না। আসলে, সাহস করে আগালে আর নিজেকে ভালো করে ইকুইপড করে লেগে থাকলে একটু আগে বা পরে হবেই, ইনশা-আল্লাহ। আর নেটওয়ার্কিং তো মাস্ট!