টেলিভিশনে নিউজ দেখেন অথবা পত্রিকা খুলে পড়া শুরু করেন, অনেক বেশী নেগেটিভ নিউজ পাবেনই। এরপর সারাদিনের ব্যস্ততা, ঝুট-ঝামেলা, বিভিন্ন সমস্যা, মানসিক টানাপোড়ন গুলো মিলিয়ে দিন শেষে কেমন ক্লান্ত আর নেগেটিভ একটা অনুভূতি আসে। পড়াশুনা বা কর্মক্ষেত্রে ভালো/খারাপ যা কিছুই হোক না কেন, মনটা কিছু অপ্রাপ্তিতে অশান্ত থাকে। মনে হয় যেন সারাদিনে ভালো কিছুই হয়নি। কিন্তু আসলে কিছু ভালো কাজ করি আমরা সারাদিনে। উপলদ্ধি করতে পারিনা বলে এমন মনে হয়। যদি কাজ গুলোকে খুজে বের করে আলাদা করে দেখতে পারি, তবে মনে হবে যে কিছু তো করেছি! সেটি আপনাকে প্রশান্তি দিবে। প্রশ্ন হলো, কিভাবে করবেন এটি?
এ জন্য আপনাকে সহজ একটি নতুন অভ্যাস আয়ত্ব করতে হবে। প্রতিদিন সব কাজ শেষে ঘুমানোর আগে একটি ডায়েরী/খাতা/মোবাইলে নোটপ্যাড খুলে বসুন। তারপর সারাদিনে কি হলো তা মনে করার চেষ্টা করুন। সকাল থেকে কি কি করেছেন তার ডিটেইল টা স্মরণে আনুন। এর মাঝে কিছু এমন কাজ পাবেন যেগুলো আপনার পক্ষ থেকে বেশ ভালো ও পজিটিভ ছিলো। সে কাজ গুলো সুন্দর করে তারিখ দিয়ে লিখে ফেলুন। এখন কোন কাজগুলোকে এ তালিকায় আনবো?
যে কোন ভালো কাজই নিয়ে আসুন। পরিবারের সাথে বিকেলে ঘুরতে গিয়েছেন বাইরে, একজন ভিক্ষুককে কিছু টাকা দিয়েছেন, কোন বন্ধুর একটি কাজ করে দিয়েছেন, মানুষের ক্ষতি হতে পারে এমন কিছু রাস্তা থেকে সরিয়েছেন, একটি অফিস মিটিং সফলভাবে শেষ করেছেন, কোন একটি জায়াগায় ভলান্টিয়ার করেছেন, নতুন কিছু শিখেছেন, অনেক দিন ধরে ফেলে রাখা কাজ শেষ করেছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। কাজগুলোকে হয়তো খুবই ছোট মনে হতে পারে। বলতে পারেন, এগুলো তো হার-হামেশাই করি, লিখে রাখার কি আছে আবার? কিন্তু আসলেই এর দরকার আছে, এ ডেইলি জার্নাল রাখার রেজাল্ট খুবই ইফেক্টীভ যার কিছু দেখে নিতে পারেন।

প্রথমেই যখন আপনি ১ সপ্তাহ ধরে জার্নাল লিখতে থাকবেন, তারপর নিজেই পড়ে দেখুন না। চমৎকার ভালো লাগা কাজ করবে নিজের মধ্যে। হাজারো নেগেটিভ জিনিস ও না পাওয়ার ভীড়ে এ সুখবোধ পজিটীভ এনার্জি পাবেন আরো ভালো কাজ করতে। এটি আপনার পটেনশিয়াল কে বাড়িয়ে দিবে অনেক গুণ। নিজের যোগ্যতা, দক্ষতা নিয়ে যদি কোন সন্দেহ থাকে, সেটি থেকে বের হয়ে আসতে সাহায্য করবে। লিস্ট দেখে আপনি অবাক হয়ে খেয়াল করবেন যে আপনি অনেক কিছুই করতে পারেন। আপনি যদি কোন লক্ষ্য নির্ধারন করেন, তবে তা অর্জনে এটি শক্তিকে বাড়িয়ে দিবে কয়েকগুন। নিজের কাজের মাধ্যমে নতুন কিছু শিখার সুযোগ থাকবে। নিজের কৃতজ্ঞতাবোধ বাড়বে অজান্তেই। সাথে সাথে কিছু লিখার অভ্যাসের কারণে লিখালিখির দক্ষতা বাড়বে। কারণ কোন কাজ প্রতিদিন করা হলে সেটিতে ভালো করা সহজ।
এ অভ্যাসটি আয়ত্ব করতে পারলে জীবনে এমন অনেক গুণগত পরিবর্তন করা সম্ভব। কিন্তু অভ্যাসটি গড়ে তুলতে হবে এখনই। আজ থেকেই শুরু করুন। কষ্ট করে ১ সপ্তাহ চালিয়ে যান। মাঝে মাঝে মনে হবে ছেড়ে দিই, কে করবে এত কষ্ট। তার চেয়ে বরং সে সময়টি ফেসবুকে স্ক্রলিং করতে থাকি। কিন্তু এটি করা যাবেনা। সপ্তাহখানেক পরে নিজেই একটি পরিবর্তন দেখতে পাবেন বলে আশা করি।
অসাধারণ আরেকটি অভ্যাস আয়ত্ব করে জীবন বদলে দিন।আপনার জীবন আপনার অভ্যাস গুলোরই একটি প্রতিফলন।