মা-বাবা, ভাই বোন, আত্মীয় স্বজনের কাছে আমাদের আর তেমন মূল্য নাই! ফোন দিয়ে নামে মাত্র কেমন আছ জিজ্ঞেস করেই বলবে তিহান কই? কেমন আছে? দেখাও তো একটু!! যদি বলি ঘুমাচ্ছে, বলে ঘুমেই দেখাও। ব্যাস, আমাদের সাথে কথা শেষ। ঘুমের মধ্যেও তিহান মনি, তিহান, তিহান ডাকাডাকি শুরু!! আর যদি জেগে থাকে, তাহলে তো বিশাল ব্যপার। গ্রুপ কলে সবাই মিলে কত কথা বলে তিহান সাহেবের সাথে!!
তিহানের দাদা-দাদী ও নানা-নানী নিয়ম করে দুইবেলা ফোন দেয় নাতীকে দেখতে। ওনাদের কন্সার্ন হলো ছেলের মাথা ভাংলো কিনা বা ঠিক হলো কিনা। কোন কাঁধে ঘুমাচ্ছে, ডানে হলে বলে বামে করে দাও, বামে হলে বলে ডানে দাও আর নাইলে বলে সোজা করে দাও!! ভাইরে ভাই, এ এক মাথা নিয়ে বিশাল গবেষণা। কখনো বলে আসা পাশে বালিশ দাও, বা মাথার নিছে কাপড় গোল করে দাও। আমরা জাস্ট নিরব দর্শক। আমার মা কথার শুরুতে একবার দেখবে আবার আমার সাথে কথা শেষে আরেকবার দেখবে। আর আফসোস করে বলবে, আহারে! কবে যে একটু কোলে নিব! কবে একটু বুকে জড়িয়ে ধরবো! বুঝতে পারি নাতী-নাতনীর মায়া সন্তানের চেয়ে কোন অংশে কম নয়।
আমার ভাতিজী আর ভাগ্নে গুলো সে এক্সাইটেড হয়ে ডাকবে তিহান কে। এটা নাকি তাদের ভাই! ঝগড়া লেগে যায় যে আসলে কার ভাই!! তাহিয়া তো তিহানকে নিয়ে সে প্ল্যান করে। তাকে নিয়ে খেলবে, পড়াবে, স্কুলে নিয়ে যাবে। আয়াজ-আনাস এক বক্স খেলনা নিয়ে দেখাবে আর বলবে এটা তোমার জন্য ভাইয়া!!
এসব আবেগ গুলা ব্যাপক হেলদি! বেশ ভাল লাগার সাথে খারাপ লাগে এ কারণে যে সবাই ফোনেই একটু দেখতে পারে, না পারে ধরতে বা কোলে নিয়ে আদর করতে! খালি মা-বাবার কোলই পায় তিহান। এটা বিদেশে থাকা বা বেবি নেয়ার একটা ডিসএডভান্টেজ! যাক, দিন শেষে আন্তরিকতা আর ভালবাসাই মাখামাখি আছি আমরা। আলহামদুলিল্লাহ্