একটা ব্যপার নিয়ে সবাই বলে যে দেশে প্রায় ৮০%-৯০% বাচ্চা সিজারে জন্ম নেয়। এ পরিসং্খ্যানের একুরিসি জানিনা তবে আসলেই যত বাচ্চা হয়, জিজ্ঞেস করলেই শুনি সিজার। নরমাল ডেলিভারি নাকি করা ডিফিকাল্ট। সবার একই কথা যে ডক্টর বলসে সিজার না করালে বেবি বা মায়ের ক্ষতি হবে, আবার আরেক ধাপ বাড়িয়ে বলে বাচানো যাবেনা। ব্যাস, দুনিয়ার কোন পাষাণ মানুষ আছে বলে মনে হয়না যে এ কথা শুনে বসে থাকবে।, ফলাফল- সিজার। বলছি না যে জটিলতা থাকেনা কিন্তু সেটার হার এত বেশি হওয়ার কথা না যেহেতু নরমাল প্রসেসেই সৃষ্টির শুরু থেকে বেবি হয়ে আসছে।
আমেরিকায় সিজার মানে হলো আসলে কোন ভাবেই নরমাল ডেলিভারি করাতে পারছে না অনেক চেষ্টার পরেও। আর যদি মা বা বাচ্চার বড় কোন ঝুকি থাকে, তখন সিজারে যায়। আমাদের কথা যদি বলি, মুনার ন্যাচারাল পেইন আসেনি বলে ফেইক পেইন দিয়ে ডেলিভারি করানো হয়েছে। সেটার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ৩৬ ঘন্টা। প্রথম ১২ ঘন্টা সার্ভিডাল নামে একটা মেডিসিন দিয়ে ইফেস পাতলা করার চেষ্টা করেছে। খুব একটা কাজ হয়নি বলে তারপরের ৪ ঘন্টা সাইড এটাক নামে আরেকটা চেষ্টা চলেছে। সেটা ও ভালভাবে কাজ করেনি আর তখন দু:শ্চিন্তায় আমার অবস্থা খারাপ আর ভাবছি না জানি এখনই ডাক্তাররা বলে সিজারে যেতে হবে। আমি বার বার নার্সদের জিজ্ঞেস করছিলাম যে যদি আসলে ইফেস থিন না হয় বা জরায়ুমুখ ওপেন না হয়, তখন কি হবে? ওরা বলছিলো উপায় আছে।
যাক, আবারো ৪ ঘন্টার জন্য ওকে মেডিসিন দেয়া হলো। তখন ১ রাত পেরিয়ে তারপরের দিন শেষ হয়ে আরেক রাত শুরু। এ ৪ ঘন্টা শেষ হলেও খুব একটা ইম্প্রুভ হয়নি। কিন্তু মূল পেইন ইন্ডুস করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যাকে পিটুসিন বলে। এটা হলো মেইন মেডিসিন যেটা রিয়েল কন্ট্রাকশন নিয়ে আসে আর ডেলিভারির কাছাকাছি নিয়ে যায়। পিটুসিনের সাথে এপিডুরাল দিয়ে দেয় যাতে পেইন টা সহ্য করতে পারে। সারা রাত পিটুসিন দেয়ার পর আপডেট জানছিলাম ১ ঘন্টা পরপর যে কত সেন্টিমিটার ওপেন হলো। বেশ টাইম নিচ্ছিলো আর সকাল ৬ টার দিকে জানায় যে যতটুকু দরকার আই মিন ১০ সেন্টিমিটার ওপেন হয়েছে আর এখন পুশ করানো শুরু করবে। তারপর থেকে ৩ ঘন্টার মধ্যে বেবি দুনিয়ায় আসে।
এটা শেয়ার করার মূল উদ্দেশ্য হলো যে এরা শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত এভাবে ন্যাচারাল ডেলিভারি করানোর চেষ্টা চালায় যেটা দেশে করতে চায়না। আমরা যখন শেষের দিকে ডাক্তার দেখাচ্ছিলাম, তখন ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম যে নরমাল ডেলিভারির জন্য কি কি করা দরকার। উনি হেসে বললেন, “আমি তো সি-সেকশনে যাওয়ার কোন কারণ দেখিনা!! সব ঠিকঠাক হবে”।পজিটিভ ভাবেই ধরে নেয় যে নরমালে যাওয়া যাবে আর চেষ্টার উদহারণ দেখলাম ডেলিভারির সময়।
আই উইশ দেশের ডক্টর রা ও একটু ধৈর্য ধরে চেষ্টা করবেন যতক্ষন পারা যায় আর সিচুয়েশন নরমাল থাকে। একটা সিজারিয়ান মায়ের জীবনী শক্তি যেভাবে শেষ হয় আর পোস্ট ডেলিভারি কষ্ট অথবা টাকা-পয়সা ম্যানেজ করার যে ব্যপারটা, সব মিলিয়ে সিজার অনেকের জন্য মরার উপর খাড়ার ঘা। শুভ বুদ্ধির উদয় হউক।